Posts

পৌরে পঞ্চায়েতের হাওয়া। টাউনে ভোট।

  পৌরে পঞ্চায়েতের হাওয়া পঞ্চায়েত ভোটের হাওয়া টাউনেও কিছু কিছু বয়।  পুর এলাকা ফুরিয়ে গেলেই পঞ্চায়েত। টাউন লাগোয়া পঞ্চায়েতগুলিতে গ্রামের ছোঁয়া কম। পুর এলাকা পার হলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে হরেক রঙের পতাকা। গাছের ডালে, দোকানের মাচায়, গেরস্তের উঠোনে। কোথাও সারি সারি। কোথাও অল্প অল্প। পতাকার দাম এক্কেবারেই যে কম, এমন নয়। প্রার্থী যদি মনে করেন নিজের বুথ-এলাকাকে একটু ভালো করে দলীয় পতাকায় মুড়ে দেবে তবে কম করে হাজার দুয়েক। পতাকার খোঁজে লাগোয়া টাউনে আসতেই হচ্ছে। পতাকা যে প্রার্থী নিজে কিনবে, এমন না-ও হতে পারে। টাউন মানে জেলা সদর। সেখানে দলের জেলা আপিস। সেই আপিসের দায়িত্ব কি নেই পতাকা যোগান দেওয়ার? তাই আসতেই হচ্ছে। তারপর আছে নিজের নামের পোস্টার ছাপা। প্রেসের লোক সময় মত পোস্টার দেবে এমনটা প্রায় হয়-ই না। এই সময় টাউনের প্রেসগুলিতে একটু ব্যস্ততা বাড়েই। নীল-সাদার নীলের কাজ হয়ে যাওয়ার পর মেশিন মুছে লাগাতে হবে গেরুয়া। মেশিন ম্যান অবশ্য সকাল থেকে ফোন ধরছে না। অগত্যা মালিক নিজেই মোছার কাজ শুরু করেছেন এবং অপেক্ষমান একজনকে বলছেন, এটার পরেই আপনারটা। আপনারটায় আবার সবুজ লাগাতে হবে। সবুজের দাম যা বেড়ে গে...

উদ্বোধন । অভিজিৎ সরকার

Image
  উদ্বোধন   অভিজিৎ সরকার   নমস্কার।  শুরু করছি আজকের যুক্তিযুদ্ধ লাইভ সেশন । আপনাদের সাথে আমি অর্ক, সদাই সতর্ক। আর প্যানেলে আজ যথারীতি বিরোধী আর শাসক দুপক্ষেরই প্রতিনিধিরা প্রস্তুত। একদম দেরী না করে চলুন প্রথমে চলে যাই আমাদের লাইভ রিপোর্ট টীমের কাছে। ধীরভূমের একদম আনাচে এই গ্রাম ব্যোমটিলা। সেই ছবি দেখাচ্ছি আপনাদের। ক্যামেরা টীম নিয়ে যেখানে পৌঁছে গেছে আমাদের রিপোর্টার সংবেদন শীল।  সংবেদন? শুনতে পাচ্ছো আমার কথা।    হ্যাঁ, পরিষ্কার শোনা যাচ্ছে অর্কদা। কোন সন্দেহ নেই, এই এলাকায় রাস্তাঘাটের তুলনায় মোবাইল নেটওয়ার্ক অনেক বেশী তুখোড়।   খুব জরুরী তথ্য দিলে সংবেদন। যে কারণে এখন একটা বিজ্ঞাপন বিরতি নেয়াও জরুরী। দর্শক বন্ধু সঙ্গে থাকুন। ছোট্ট বিরতির পরে আমরা ফিরে আসছি আজকের মস্ত বড় স্টোরি নিয়ে। আপনার প্রিয় অনুষ্ঠান যুক্তিযুদ্ধে!  দর্শকরা হাতি ঘোড়া, ব্যাং মাথা কিছু বুঝে ওঠার আগেই অন হয়ে যায় বিজ্ঞাপন। জমকালো গান।    আহা নেটওয়ার্ক আমাদের সবখানে সেট আছে বস।  কোত্থাও ড্রপ নেই, নেই সিগন্যালে কোন লস।  আমলকি নেটওয়ার্ক -...

জনসেবক জগদীন্দ্রদেব রায়কত । ঊমেশ শর্মা

Image
জনসেবক জগদিন্দ্র দেব রায়কত উমেশ শর্মা   বৈকুন্ঠপুরের রায়কত যোগেন্দ্র দেব মানিকগঞ্জের গ্রাম্যবালক জগদিন্দ্রকে পোষ্য পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। জগদিন্দ্র দেব রাজ গদি পেলে পরিচিত হোন ‘পোষ্য রাজা’ নামে।   তবে কথাটির মধ্যে কোন ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ ছিল না। সেটা ছিল জলপাইগুড়ির মানুষের সহজ-সরল অভিব্যক্তি মাত্র। অনক্ষর কন্ঠে   সেটা উচ্চারিত হতো 'পশুরাজা'। বলুন তো লোকে কাকে 'শিয়াল দাস' বলে ডাকত?   একদম ঠিক ধরেছেন। সি আর দাসকে। উনিশশো কুড়ি সালের মে মাসের ২৯ তারিখে বাসন্তী দেবীকে সঙ্গে করে জলপাইগুড়ি এসেছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস। তিনি অতিথি হয়েছিলেন জগদিন্দ্রদেবের বাড়িতে। তিনি তখন জেলা কংগ্রেসের সভাপতি। ওই সময়ে শহরে যারা ‘রায়বাহাদুর খানবাহাদুর’ ছিলেন, তাদের পক্ষে দেশবন্ধুকে অতিথি করা সম্ভব ছিল না। জগদিন্দ্র দেব সভা করার অনুমতি দিয়েছিলেন বাড়ির সামনের বিরাট মাঠে। মাত্র এক বছর আগে অনুষ্ঠিত হয়েছে জালিয়ানওয়ালাবাগ। রবীন্দ্রনাথ নাইট উপাধি ত্যাগ করেছেন। গান্ধী ত্যাগ করেছেন 'কাইজার-ই-হিন্দ' উপাধি। জগদিন্দ্রদেব অনারারী ম্যাজিস্ট্রেট-এর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে নেমে...

জলরং। সৌগত ভট্টাচার্য।

Image
  জল রং  সৌগত ভট্টাচার্য     বাবলার হাতের শিরাগুলোকে নদীর মত দেখায়। হাতের পাতার কাছাকাছি আসলে শিরাগুলো মোহনার মুখে হাজার হাজার ক্লান্ত উপনদী হয়ে যায়, বড় ঢেউয়ের সাথে মেশার অপেক্ষায়। একটা সময় ছিল যখন পেন্সিল দিয়ে রেখা টানলেই যেন নদীর ঢেউ আছড়ে পড়ত সাদা কাগজে। সাদা আলোর বাল্‌ব হাওয়ায় নড়লে পেন্সিল থেমে যায়, শিরায় রক্তের ঢেউও থামে, বয়েস বেড়েছে। আজকাল খুব বেশি রক্ত স্রোত আর শিরা-উপশিরারা বইতে পারে না। সমুদ্রের অনেক দূরে ঢেউগুলো ভেঙে চুরমার হয়ে ফেরত যায় হৃদপিণ্ডের দিকে। না-আঁকাগুলো নিয়ে হৃদপিণ্ডের মাংস পেশী ছটফট করে। আজকাল আর সাদা কাগজে কোন জলের নোনা দাগ পড়ে না। ঝুলতে থাকা সাদা বাল্বের আলো থেকে নিজের চোখ আড়াল করে রাখে মোটা কাগজ দিয়ে, সরাসরি চোখে যেন আলো না পড়ে। বাল্বের আলো কিছুটা কাগজের ওপর, বাকিটা কাস্টমারের মুখে দোল খায় নদীর শুকনো হাওয়ার সাথে। কাস্টমার নড়ে উঠলে বাবলার হাত থেমে যায়, ঢেউও ফিরে যায়। দিনের বেলায় আলোর দরকার হয় না, রাতের জন্য এই ব্যবস্থা। আলো নিভিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে ক্যাম্পে যায় বাবলা। ক্যাম্পে যাওয়ার আগে কিছুক্ষণ মেলায় ঘোরে সে। সারারাত মেলা চলে, লোক চলে। ...